তারাগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি :
পৃথক দুটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তিন পরিবারের নিঃস্ব হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের দমকলকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌছার আগেই আগুনের লেলিহান শিখায় পুরে ছাই হয়েছে পরিবারগুলোর সর্বস্ব। রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার ইকরচালী ও হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নে এ দুটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে ।
শনিবার (৫ আগস্ট) দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে বৈদ্যুতিক তার থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে ইকরচালী ইউনিয়নের বালাপাড়া গ্রামের হারুন অর রশিদের পুত্র নওশাদ আলী ও আবুল কালামের দুইটি বসত ঘর ও একটি গোয়ালঘরে।
এতে বাছুরসহ একটি বিদেশী গাভী ও একটি গর্ভবতী গাভী এবং তিনটি ছাগল পুরে ভস্মিভুত হয়। এছাড়াও নওশাদ ও কালামের বসত ঘরে রাখা বিছানা, পড়নের কাপড়, বিছানার নিচে রাখা নগদ প্রায় ৮ হাজার টাকা পুরে ছাই হয়। গরু রক্ষা করতে গোয়ালঘরে গেলে কাধে ও পিঠে আগুন লাগায় আহত হয়ে তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে নওশাদ। দুই পরিবারের প্রায় ৪ লক্ষ থেকে সাড়ে ৪ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার সূত্রে জানা গেছে।
অপরদিকে উপজেলার হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নের মেনানগর ২ নম্বর জুম্মাপাড়া গ্রামে রবিবার সকাল আনুমানিক ৯টার দিকে রান্না করা চুলার আগুন ঘরের বেড়ায় লেগে ৩টি ঘর পুরে ছাই হয়ে যায়। এসময় গোয়ালে রাখা একটি দেশীয় জাতের গরু আগুনের তাপে আহত হয় ও বসত ঘরের সবকিছু পুরে ছাই হয়। ওই গ্রামের মুকুল মিয়ার (৫৮) বাড়িতে এ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এঘটনায় মুকুলের প্রায় ২ লক্ষ থেকে আড়াই লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে।
অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে তারাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের দমকলকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই ভস্মিভুত হয় পরিবারগুলো। পরে দমকলকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করায় বেচে যায় ওই পরিবারগুলোর পার্শ্ববর্তী বাড়িঘরগুলো।
রবিবার দুপুরে পৃথক দুটি অগ্নিকান্ডের স্থান পরিদর্শন করেন তারাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রাসেল মিয়া, প্রকল্প বাস্তাবায়ন কর্মকর্তা প্রকৌশলী আলতাফ হোসেন, কুর্শা ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি আফজালুল হক সরকার ও ঘটনাস্থল দুইটির স্ব স্ব ইউপি চেয়ারম্যান। এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিবারগুলোর মাঝে নগদ ৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা, খাদ্য সামগ্রী ও কম্বল প্রদান করেন।
খবর পেয়ে অগ্নিকাণ্ডের স্থানে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে দেখা যায় উৎসুক জনতার ভীর। পুরে যাওয়া গরু ও ছাগলগুলোর বোটকা গন্ধে ভারী হয়েছে আশপাশের পরিবেশ। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের দেখা যায় অশ্রুসিক্ত অবস্থায়। অগ্নিকাণ্ডে আহত নওশাদের স্ত্রী কান্না জড়িত অবস্থায় বলেন, হামার সউক (সবকিছু) পুরি ছাই হয়া গেল।
হামরা এখন খামো কি আর পেন্দোমো (পড়বো) কি? হামাক এখন আবার নয়া করি সংসার সাজের লাগিবে। এতগুলা টাকা এখন পামো কোনটে!